DEHLIJ

সুজিত দাস

 আমাকে নিয়ে যা যা করতে পারতে তুমি।




নিয়ে যেতে পারতে যে কোনও দ্বীপে। 

একটিই নৌকা বানাতাম আমরা। ফলমূল খেয়ে বেঁচে থাকতে পারতাম বহুবছর। দুজনের ত্বকে পিছলে যেত মাছি এবং রৌদ্র। নির্জন দ্বীপে সম্পূর্ণ নিরামিষ আহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়তাম। সোনালি বালুর ওপর নিজেদের নাম লিখতে পারতাম। লিখতাম শত্রুমিত্র সকলের ফোন নম্বর। এভাবেই বর্ণমালা এবং সংখ্যা স্মৃতিতে ধরে রাখা যেত।


একজন ভোটে দাঁড়ালে অন্যজন ক্যাম্পেইন করতাম। আমাদের ভোট দিত সামুদ্রিক পাখি, অগণন ঢেউ এবং নাম না জানা গাছেরা। দু’একটি চতুর সীগাল প্রক্সি ভোট দিতে গিয়ে ধরা পড়ত। 


ম্যাপে নেই এমন একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নিয়ে যেতেই পারতে আমাকে। 


যেখানে ওলা, উবের নেই। আলোচনা সভা নেই (নিৎসে এবং চমস্কি, অবভিয়াসলি, কেউই নেই)। ক্রেডিট কিংবা ডেবিট কার্ড নেই। এমন ‘সব পেয়েছির দেশে’ টুক করে নিয়ে যেতে পারতে। পারতে না, বলো? পাখিদের নাম দিতাম আরতি অথবা হেমন্ত। মোম জোছনায় কত কী হতে পারত। অথচ কিছুই হতে দিলে না। ‘ব্লু লেগুন’-এর দেশজ প্লটটা স্রেফ মাঠে মারা গেল তোমার এই উদাসীনতায়!


এসব কিচ্ছুটি না করে বিরাট একটা লাল টিপ কপালে সেঁটে দাপিয়ে বেড়ালে নন্দন চত্বর। পুজোর সময় চুল ইস্ত্রি করালে, অ্যাটাচ বাথ স্বামীটিকে নিয়ে বেড়াতে গেলে ভাইজ্যাক, আরাকু ভ্যালি। ময়ূরী ট্যুরিস্ট লজ থেকে বোল্ড সেলফি পোস্ট করলে। গোটা কন্ডাক্টেড ট্যুরে তেত্রিশটা অভ্যস্ত চুমু, কয়েক প্লেট হাক্কা নুডল আর মেয়োনিজে ভেজা লেগ পিস্‌। ভাবা যায়! সর্বাঙ্গে র‍্যাপারের মতো রাধাভাব জড়িয়ে এই আহ্লাদ তোমার মতো আগুনখোরের সঙ্গে একদম যায় না। জাস্ট যায় না।


আমাকে নিয়ে অনেক কিছুই করতে পারতে।

টপ করে গিলে ফেলতে পারতে ট্যাবলেটের মতন।

সর্বিট্রেটের মতো রাখতে পারতে জিভের তলায়। সময় দিতে পারতে রক্তে মিশে যাওয়ার।


 


1 comment:

  1. শেষ চারটি পংক্তি যেন এক অখণ্ড আশ্চর্য কবিতা!

    ReplyDelete