মানিক বৈরাগী
গোলাকার দুনিয়ায় একপাশে আলো, অন্যপাশে...
সেই কবে! অন্তত তিরিশ বছর হবে
আমার মুখমণ্ডলে সদ্য কোমল দাড়ি- গোঁফ
উজ্জ্বল - শ্যামবর্ণের লিকলিকে শরীর
একবছর সিনিয়র ক্লাসে, ক্লাসের অবসরে আন্তরিক আড্ডা
আড্ডার মাঝে ধুমসে সিগারেট ফুকছে, আর
উর্ধ্বাকাশে ধোঁয়ার রিঙের মত আধুনিক মমনবিদ্যার দর্শন উড়াচ্ছে
তার রূপজৌলুশে কাস্মীরীকন্যার অধরযুগলে সিগারেটের নিকোটিনের রঙে শিহরিত কালো প্রলেপ
তারপর আরবার দেখা হলো, গোলাকার দুনিয়ায় ঘুরতে ঘুরতে সমুদ্র সৈকতের বিশাল জলরাশির সামনে
আমি একা, সে পরিবার সমেত বোরখায় আবৃত
কোন এক ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তার ঘরণী আজ
তবুও সে আমাকে চিনেছে, মনে রেখেছে
তারপর তারপর
তার আর পর নেই।
আহবান
বহু ফলের রসে মাতাল মৌতাত শীতের নগর।মৌসুমি শৈত্য প্রবাহে জুবুতুবু তুমি, ওম নিতে এসো তপ্ত বুকের অলিন্দে।
ঠিক ঠিক এখানে ভোরে সুর্য ওঠে অসিম প্রতাপে, কুয়াশা পালায় আমার দৌড়ের নৈরাজ্যে।
পাড়ার বুড়িটি ঠিক হীম হীম বাতাসে ঝুপড়ি দোকানে ধুঁই পিটার পসরা সাজায়, গুড়ের রসে চুবিয়ে খায় দারুন আহ্লাদ,উঠতি যুবকেরা তাড়িরসে চুবিয়ে খায় লাল লাল পোড়াপিটা।
তুমি এসো আমরা ফলজ রসের তাপে ও ধোঁয়ায় চিবিয়ে খাবো জড়তা- আড়ষ্টতা দারুণ উদ্দামে
এখানে ইউরোপ কাস্মিরের মতো বরফ ঝরে না, রাতের কুয়াশায় ভিজে বৃক্ষরা, টগবগে দারুণ তারুণ্য পায়,সবুজ পেলবতা ছড়ায়, শীতের আস্কারায়।
আমাদের দেশে শীতে পাখি নয়, বৃক্ষ ও দারুণ যৌবনপ্রাপ্ত হয়।।
তুমি এসো এই নগরে, তোমাকে নিয়ে খোলা জিপে চড়ে কুদঙ গুহায় বেড়াতে যাবো।
ওখানে আদীবাসি তঞ্চগ্যা পাড়ায় নিশি পোহাবো।
এসো লক্ষীদেবী,সীতাদেবী,
মিথ্যে চরিত্রের রাবণ হবো না,
রাবন হবো না,প্রেমিক রাবন কে একবার খোঁজে দেখো
এই শীত নগরে সমুদ্রের পাশে।
৩০পৌষ ১৪২৩ বাংলা
১৩জানুয়ারি০১৭ইসায়ি
রোদের ভিড়ে একা
ভোরের কুসুম রোদও আজ কাল তাপদাহ ছড়ায়
বিজ্ঞান বলে জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল,মানুষ করেছে
প্রচন্ড রোদের ভিড়ে তবুও একা চলা মন, গরমকোট পরেও ঘামেনা
রোদের তাপে নয়, মনের তাপে স্বপ্ন বিহনে জ্বলে জ্বলি জ্বলনে
মানুষ পোড়াবে আমায় বিরহ পুরাণে।
অশ্লীল মনোঝড় না হলে শ্লিল শেখাও কোন সখে সখা?
প্রচন্ড রোদের ভিড়ে একা একা।
জলজট মনোঝড়ে করো ছটফট কার বিহনে?
কোন কারনে এমন বেশ নিলে,মানুষের কারনে?
প্রচন্ড রোদের ভিড়ে জনজটে তবুও নি;সঙ্গতা
আমাকে ঘিরে নির্ঘুম চোখে পাহারা লেখা
মানুষের প্রয়োজনে!!
মাতোয়ারা শরতে
শারদ চাঁদজোছনার পহরে, আলোয় টলোমলো চারদিক
কাশবনের আডালে লুকিয়েছিলাম
হই হই রবে মেঘ গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ
সাদা ইলশা মেঘের কামার্ততায় আমরা
সবুজ ঘাসেই আমাদের বাসর গালিছা
গভীর কামোষ্ণ অন্তহীন যুতসই রাত।
মুখভর্তি যোনিরসে সাতার কাটছি হালদায়
পাড়ায় মাতম করছে বুড়াবুডি ও কাটমোল্লা
তরুণ তরুণীরা মাতোয়ারা বুধি -পূর্ণিমায়
ফানুস উড়ছে উদ্দাম আকাশে জ্বল জ্বলে।
ঝির ঝির হাওয়ার রাতে গড়া গড়ি খায় কাশফুল তুলো,
অবাধ বাতাসে দোল খায় কামিনি সুরভি
এমোনি ইলশে জীবন আর কি আসবে ফিরে, এই শরতে?
শারদ ভাদরে
চিড়িয়াখানার আহত হিংস্রপ্রাণীর মতো পাহারা সমেত ঘিরে থাকে সফেদ শাড়ী
ফর্সা নার্সের শাড়ি ব্লাউজ ছিড়ে ডুব উরুসন্ধির মহোনায়
সাতার কাটবো মোহোনা থেকে নদীতে
সরু পথ বেয়ে উঠে যাবো পাহাড়ের উচাটন টিলায়
কালো কালো রেশম ছিড়ে বানাবো শংকা চিহ্ন
পুরুষ্ট গোলাবি ঠোঁটে কামুক কামড়ে এঁকে দিবো দ্রোহের পতাকা।
অনায়সে দখলে নিয়েছে পূর্ণিমা তিথিতে ছাদের আড়াল
পূর্ণিমা যতই রূপ জোসনার শৃঙ্গার করুক
কিন্তু তুমি ঐ জোসনার ছেয়ে কম না
তুমিতো চিরযৌবনা, ক্ষীণ আয়ু শারদ জোসনা
হাসপাতালের ধপধপে ফর্সা নার্সরা কখনো প্রৌড় হয়না
তুমিও তেমন মন মাতোয়ারা যেনো
গোমড়া মুখো দাম্বিক ডাক্তারনির চাইতে
নার্স কে ভালো লাগে,নার্স আপারা কখনো প্রৌড়া হয়না।
ওরা ছুঁয়ে দিলেই আমার অসুখ ভালো হয়ে যায়।
Social Media Comment