দিলীপ ফৌজদার
অশ্বমেধের অশ্ব
অশ্ব যাবে মহাভারতের
রাজ্যে রাজ্যে
সব বড় মাঝারি আপাত রাজা- বাদশার দেশ গুলিতে
সব ছোট ছোট সামন্ত রাজ্যে
ডঙ্কানিনাদে
জেতবার আগেই তার জিতের বার্তা পৌঁছে দেবে
ঘোড়া
আড়াই চালের ঘোড়া, তার
শেষ অর্ধেক চালটা
দুর্ধর্ষ
এসেই বলে জিতে তো গেছিই
বাকীটুকু উপচারমাত্র
কাজেই
বাধা দেওয়া নয়
তাহলে মারাত্মক বোকামো হবে
অশ্বমেধের অশ্ব,
ডঙ্কানিনাদে পৌঁছাবে
জেতবার আগেই তার জিতের বার্তা
ঘোড়া
আড়াই চালের
অশ্বের চারটে পা
সর্বদা সচল থাকে
আগের থেকেই প্রোগ্রাম এ বাঁধা
তাতে আর কোন নড়চড় হবার নেই
ঘোড়ার একটা মস্তিষ্কও আছে
সময় ও কাল দিয়ে বাঁধা
টিকটিক সবসময়
সুমতিরা দেখতে পায়
চলছে
এগোচ্ছে
পৌঁছাচ্ছে
অশ্বমেধের ঘোড়া
তার চেয়েও অনেক বেশি দেখতে পায়
দেখতে পায় পরিণতি
তার মাথায় মুকুট পরিয়ে
ভারতবর্ষ পরিক্রমা করান হয়
ঘোড়া কখনোই মনে …
ঘোড়া কখনোই মনে পোষে না
যে সেই ই রাজচক্রবর্তী
সে জানে
পরিক্রমা শেষ হলে ঐ ক্ষমতা,
ও স্তাবকেরা, গোল হয়ে বসবে
ততক্ষণে অশ্বমেধের ঐ
ঘোড়ার বলি হবে
তার মাংস ঝলসানো হবে
যজ্ঞের আগুনে কালান্তর হবে
ঐ স্তাবকেরা তখনো বসেই থাকবে
ঝলসানো মাংসের লোভে।।
বরখা আই ঈ
একটু একটু করে ফর্সা হলেও
আশার বাসা বাঁধে
জেদী, শব্দ না তোলা খড়কুটো
অনেক কোলাহলের তলায় শব্দনীড় চাপা পড়ে থাকে উপেক্ষার তলদেশে
আলো এত ক্ষীণ হয়ে আসাতে এখন
আলোরই কথায়
মস্তিষ্কের ভেতরে আলোড়ন
ততক্ষণে মেঘ আর ভোর আর রোশনী মিলে
ডিজিট্যাল তর্কের একটা অলীক
আসর জমাতে চায় - তুমুল --
সেখানেও কোলাহলেরই আধিপত্য
আরো অনেক বেশি আড়ম্বরে
নীরবতারও একটা ক্ষমতা থাকে
মৌমাছিদেরও থাকে এমনি মধু
এইভাবেই
তারও গোপন প্রকোষ্ঠ গুলি ভরতে থাকে
মধু অন্যতম মিষ্টান্ন নয়
মধুমেহর সঙ্গেও তার কোন লেনদেন নেই
প্রত্যেক মধুকূপী এক একটি
জমানো শক্তির ব্যাটারী
অনাবৃষ্টির দেশে অল্প বৃষ্টিতেও
পাতা নড়ে,
অবাক, দ্যাখো ঐ ভেজা পাতায় আলোর ছটার ডগমগ বর্ষাকালীন ভরাট
পাতার সবুজ তার ভেতরকার অসামান্য তারুণ্যের দ্যুতি
উদ্দীপনা জাহির করে বেড়ায়
আপন স্বভাবেই
কদিন আগের খরায় পথহাঁটায়
অবশ্যই ছিল বাড়ী ফেরার আশ্বাস আর আস্থা
যেটার কাছে তুচ্ছ
নাটকীয় মঞ্জীল যা
জনপ্রিয় গানের কলি থেকে
নেমে এসে বারম্বার বাধাগুলোকে বলীয়ান করছিল না
ফেলে আসা কোটরে কোটরে প্রসারিত বিস্তৃত ক্ষমতার রক্তচক্ষু বা
সমান্তর শ্যেন
ক্ষুধা ও মৃত্যু কে পাশ কাটাতে কাটাতে
শ্যেনদৃষ্টি রক্ষা করছিল
সংকল্পের ইন্ধন
সকলকে বলতে চাই যে
জেগে আছি
হতে পারে
ঐ উপেক্ষার তলানিতেই
কিন্তু জেগে তো আছি
কোত্থাও কোন শব্দ নেই
আসমুদ্র ঢেওয়েরা আসছে তো
আসছেই
আছড়ানো শব্দরা নিউজমিডিয়ার
পর্দায় ছাপ ফেলায়
অপারগ
এই জায়গাটায় কোন অপরূপ সৈকত নেই শুধুই পাথর
শ্যাওলা এত যে শুষে নিচ্ছে আঘাত
আছাড়ের শব্দ ও পায়ে পথ চলতে চলতে চেতনায় দৃশ্য-স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ-স্পর্শ
সকলে কোথায় পায়!
যে বা পায় তার দেয়ালে
অনবরতই বদলাতে থাকে
রং
সহজ, জটিল,
চট্টানের কঠিন, বালিধোওয়া বাতাসধোওয়া অমল,
কখনো দিগন্তে জল ও
আকাশের সরল বাটোয়ারার একরৈখিক শব্দহীনতা
কখনো বা সৈকতের ওপরেই সবুজ পাহাড়িয়ার ঝাঁপের উপক্রম
এই হাঁটা যেরকম
স্বতঃস্ফূর্ত, সাবলীল, মুক্ত এবং বলীয়ান
আজকের অসুস্থ দিনগুলি নানা অর্থে গৃহবন্দি
অমল
সে দরজার সীমানা পেরিয়ে
মুক্ত মানুষ হতে চায়
সকলের হাঁটাচলা হাঁক ও
পশরা সর্বক্ষণ দ্যাখে
জানালার গ্রীল এ মুখ রেখে
চলমান রাস্তাকে দেখে যাওয়া তাতেও তো
একধরণের মুক্তি
এই বহুমাত্রিক চলমানতাও বৈশ্বিক
মাত্রা বাড়লে জাগতিক বিষয় ও শাশন, শাসানি ইত্যাদির
তর্জনীকে ডিঙিয়ে
মহাবিশ্ব ছুঁতে যায় ভাবনার শূন্য যানে
এই সময়টাও অমনি যখন
বিধিনিষেধের সঙ্কীর্ণতা
ঘরের
ভেতরকার বাতাসকে ভারি
করছে
বাইরের বাতাস লকডাউন লাগা
সকলেই বলেছে অনেক স্বচ্ছ
মানে প্রদূষনহীন
সব প্রদূষন এসে হৃদয়ে জমছে
বর্ষার কালো মেঘ চার্দিক ঘিরে ফেললেও
এরকম কোন আশঙ্কার কথা নেই যে
প্রচ্ছন্ন শয়তান কোন নাটকীয়
এন্ট্রি নেবে
সংবাদপত্রে বন্যা, তারই বিধ্বংসী ত্রাসের দৃশ্য ভিডিওতে
চব্বিশ ঘন্টার কড়ারে
উঃফ
কত তৎপরতায় বেড়ে গেল
এত টেকনলজি
সর্বনাশের জয়ঢাক বাজাতে বাজাতে
অন্ধকারের অস্পষ্টতাকে কাটিয়ে
ভোর ফুটলে সব ফুল
একসাথে হেসে ওঠে
মেঘের সকল অন্ধকার ঝেড়ে ফেলে
উঠে পড়ি। চৌকাঠ পেরিয়ে আরো
দূ্রে যেতে হবে
লকডাউনে রোগবালাইএর
তর্জনীকে এড়াতেই
কুঁকড়ে আসা চার দেয়াল
কোনঠাসা করতে আসছে
তবে কেন সঙ্কীর্ণতা! কে বাঁচাবে?
লকডাউনে রাস্তায় পুলিশ
দণ্ড হাতে
আদালতে তালা ঝুলছে
Social Media Comment